বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:ফের বেলাগাম দিলীপ ঘোষ। রবিবার ইকো পার্কে যোগ দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়েও বিজেপির রাজ্য সভাপতি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় জানিয়ে দিলেন, তিনি যা বলেছেন, তা ভুল নয়। বরং যাঁরা ভিন্ন কথা বলছেন, তাঁরাই ভুল। উল্লেখ্য, সম্প্রতি তিনি মন্তব্য করেন, ক্ষমতায় এলে তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমা করবে না বিজেপি। বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলাও নেওয়া হবে। তাঁর ওই মন্তব্যের পরই রাজ্য জুড়ে সমালোচনার ঢেউ ওঠে। কিন্তু কোনও সমালোচনাকেই গুরুত্ব দিতে রাজি নন দিলীপ। এদিন পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, কাপুরুষরাই ক্ষমার কথা বলে।
নিজের পক্ষে বলতে গিয়ে এদিন তিনি চিন প্রসঙ্গও টেনে আনেন। বলেন, ‘চিন যখন ভারতে হামলা চালাতে চাইছে, তখন ‘ইন্দি–চিনি ভাই ভাই’ বললে এ দেশ আরও অঞ্চল দখল করে নেবে ওরা, যে ভাবে একদিন আকসাই নিয়ে নিয়েছিল। এই পৃথিবীরই নিয়ম হল, যে যেমন ভাষা বোঝে, তার সঙ্গে সেই ভাষাতেই কথা বলা। ব্যর্থরাই অন্য কথা বলে। তাই তারা পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।’ শুধু তাই নয়, এদিন তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘আমি মোটেও হিংসা করার কথা বলিনি। বলেছি, যারা হিংসার মাধ্যমে রাজত্ব করতে চায়, তাদের হিংসার মাধ্যমেই জবাব দিতে হবে। না হলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণও যুদ্ধ করতেন না। সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁকেও একদিন যুদ্ধ করতে হয়েছে। কংস–সহ অনেক অত্যাচারীকে ধ্বংস করতে হয়েছে। এমনকী, পাণ্ডবদের দিয়েও কৌরবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাতে হয়েছে।’ তিনি দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, ‘পৃথিবীতে যত সমস্যা রয়েছে, সব সমস্যার সমাধানেই হিংসার প্রয়োজন হয়েছে। দুর্বল আর অলসরাই বলে, হিংসা করব না।’
তবে এদিন দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে পাল্টা মুখ খুললেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এদিন গোপালনগরে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতার অভাব রয়েছে। তাই তাঁর সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। শুধু একটা কথাই বলব, বাংলার সংস্কৃতিতে এ–সব চলে না। কোনও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতা এই ধরনের কথা বলতে পারেন না।’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি সায়ন্তন বসুকেও আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘এই নেতারা অশিক্ষিত। তাঁদের দিল্লি নিয়ে গিয়ে এইমসে চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন রয়েছে।’ কিন্তু যিনি এদিন এত কথা বললেন, সেই তিনিই রাজ্যের ক্ষমতায় তৃণমূল আসার পর বলেছিলেন, ‘সিপিএমের সঙ্গে মিশবেন না। কোথাও তাঁরা গেলে পাশে বসবেন না। তাদের দেখলে গোখরো সাপের মতো পিটিয়ে মারুন।’ তাই তাঁর এদিনের মন্তব্য মানুষের মনে কৌতূক তৈরি করবে। এই মন্তব্য এক বামপন্থী রাজনীতি বিশেষজ্ঞের।